শুরু হল ৩৩ তম বিষ্ণুপুর মেলা : শিল্প সংস্কৃতির মেলবন্ধনে মিলন মেলা

23rd December 2020 8:48 pm বাঁকুড়া
শুরু হল ৩৩ তম বিষ্ণুপুর মেলা : শিল্প সংস্কৃতির মেলবন্ধনে মিলন মেলা


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) :   উদ্বোধন হয়ে গেল রাঢ বঙ্গের অন্যতম আন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিষ্ণুপুর মেলার। উদ্বোধন করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। উদ্বোধনী সংগীত গেয়ে মন্দির নগরী বিষ্ণুপুর মেলার শুভ সূচনা করলেন রামশরণ সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় অধ্যাপক সুজিৎ গাঙ্গুলী।  আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত এই মেলা দেখার জন্য, রাঢ বঙ্গের কৃষ্টি-সংস্কৃতি উপভোগ করার জন্য দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা মুখিয়ে থাকেন। কিন্তু এবার কোভিড পরিস্থিতিতে মেলার আয়োজনে বেশকিছু কাটছাঁট করা হয়েছে। এ বছর মেলার জৌলুস আড়ম্বর অনেকটাই ফিকে।যেমন মেলার আয়োজন রাস টানা হয়েছে তেমনি কমেছে মঞ্চের সংখ্যা।প্রতি বছর বিষ্ণুপুর মেলায় চারটি মঞ্চ করা হয় এবার দুটি মঞ্চ করেই মঞ্চস্থ করা হবে বিভিন্ন স্থানীয় শিল্পী গোষ্ঠী সহ বলি টলিউডি শিল্পীদের অনুষ্ঠান। ৩৩ তম বিষ্ণুপুর মেলা চলবে ২৩ থেকে ২৭ শে ডিসেম্বর ৫ দিনব্যাপী। বিষ্ণুপুর মেলার আসর বসেছে বিষ্ণুপুর হাইস্কুল ময়দানে। চারটি মঞ্চে মঞ্চস্হ সংস্কতিক অনুষ্ঠান দেখতে ফি বছর মেলার দিনগুলি বিষ্ণুপুরের মন্দির নগরীতে সমাগম হয় প্রচুর পর্যটকের। চারটি মঞ্চে মঞ্চস্থ হয় বলিউড টলিউড বিভিন্ন স্টার শিল্পীরা মনোরঞ্জন করেন অগণিত বিষ্ণুপুরবাসী থেকে মেলায় আগত পর্যটকদের। কিন্তু এবার চারটি মঞ্চের জায়গায় হতে চলেছে দুইটি মঞ্চ। বাঁকুড়ার মনীষী ও কৃতি সন্তান যদুভট্ট ও রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় এর নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছে দুটি মঞ্চকে। এছাড়াও থাকছে সদ্য প্রয়াত চলচ্চিত্র অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত বিভিন্ন ছবি ও কর্মজীবনের স্বীকৃতির ছবি আর্ট গ্যালারি স্থান পাবে। এছাড়াও বিষ্ণুপুরের কৃতিসন্তান সদ্যপ্রয়াত পুরাতত্ত্ববিদ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্তের নামে একটি মঞ্চ উৎসর্গ করা হয়েছে। যেখানে সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ, কোভিড সচেতনতা, লিগ্যাল সার্ভিস বিষয়ে সচেতনতা, বিজ্ঞান ও কুসংস্কার,বাল্য বিবাহ সহ বেশ কিছু বিষয়ে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।বিষ্ণুপুর সহ দেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প তুলে ধরতে রাখা হয়েছে ১০০ টি স্টলের আয়োজন। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের শিল্পীদের হাতে রুজি-রুটির ব্যবস্থা করতেই এই আয়োজন বিষ্ণুপুর মেলার।এছাড়াও মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরের শিল্প ভাবনাকে সারা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতেই মিলেছিল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। কোভিড পরিস্থিতিতেও এবছরও স্থানীয় আদিবাসী তপশিলি বিভিন্ন শিল্পী ও শিল্পী গোষ্ঠী তাদের শিল্পভাবনার পরিচয় দেবে বিষ্ণুপুর মেলার মঞ্চে। বিষ্ণুপুর মেলায় থাকছে মন্দির নগরী টেরাকোটা সহ বিভিন্ন শিল্প সামগ্রী। এছাড়া বিষ্ণুপুর ঘরানা সংগীত কেউ বিশেষভাবে নজর দেয়া হচ্ছে এবছর। সব মিলিয়ে পৌষালী সন্ধ্যায় কনকনে ঠান্ডায় আগামী পাঁচ দিন সংগীত, শিল্পী ও শিল্পভাবনা কে সঙ্গে নিয়ে কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মেলার আগুনে হাত শেঁকবেন স্থানীয় ও ভিন রাজ্যের ভিন দেশের পর্যটকরা এমনটা মনে করাই যায়।





Others News

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : তোপধ্বনি তে কেঁপে উঠল বিষ্ণুপুর । শুরু হল মল্ল রাজাদের ১০২৫ বছরের অষ্টমী পূজোর সন্ধিক্ষণ।

প্রাচীণ ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে আজও নিষ্ঠাভরে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গা 'মৃন্ময়ী নামে পূজিতা হন। জানা গিয়েছে, পূর্ব প্রথা মতোই প্রাচীণ রীতি মেনে মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে কামান দাগার মধ্য দিয়ে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে শুরু হয়ে গেল 'বড় ঠাকরুনে'র পুজো। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দর্শক সাধারণের উপস্থিতি ছিল বাঁধভাঙ্গা। সরকারী নিয়মকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনা। এমনকি এখানে কামান দাগার পর্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে অল্প সংখ্যক লোককে নিয়ে ঐ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

শুরুর সময় থেকে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ ঘোষণা করা হয় বড় কামানের গর্জনের শব্দে। যার আওয়াজে রাজবাড়িতে আরতি নৃত্যও শুরু হয়ে যায়।